স্টাফ রিপোর্টার, হুগলি: আবার কি ফিরে এল সেই কালো যুগ? যেখানে কুসংস্কারে ভর করেই কাটবে মানুষের জীবন? হুগলির সিঙ্গুর এলাকায় একটি ঘটনা, সেই আতঙ্কই ফিরিয়ে দিল! সিঙ্গুরের বিঘাটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নাকি একদল মানুষ তেল ও জল পোড়া দিয়ে অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করে দিচ্ছেন। সেই দেখে বহু মানুষই ভিড় জমাচ্ছেন এই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে৷ তবে ডাক্তারের বদলে আস্থা রাখছেন ধর্মের উপরই। সিঙ্গুর-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বহু পুরুষ ও মহিলা এই অন্ধ বিশ্বাসে সামিল হয়েছেন৷
এ যুগেও এমন বুজরুকি! হতবাক করে৷ যদিও যারা এই টোটকা দিচ্ছেন, তাঁদের দাবি এতেই সমস্ত রোগ নিরাময় হয়েছে৷ তাই এতো মানুষ বিশ্বাস করে এখানে আসছে। এই বিষয়ে হুগলি জেলার সিএমওএইচ বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ অন্ধ বিশ্বাস। এটা কোনও মতেই বিশ্বাস করা যায় না। এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন: কলকাতা ২৪x৭ এর খবরের জের: সাহায্য পেল মেধাবী ছাত্র
বিঘাটি গ্রামপঞ্চায়েতের ২৯ নম্বর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যেই চলছে তেলপোড়া, জল পোড়া দেওয়া। জল ও তেল পোড়া দিয়ে অসুস্থ মানুষ সুস্থ হচ্ছেন বলে দাবি সাধারণ মানুষের। ক্যান্সার-সহ বেশ কিছু মারণ রোগ অনায়াসেই ভালো হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে এক বাসিন্দা প্রত্যুষ রায় বলেন, ‘‘আমরা অনেক দিন ধরেই উপকার পেয়ে আসছি। তাই মানুষ এখানে ভিড় জমাচ্ছে। এখানকার নিয়ম মানুষ তাদের বিভিন্ন রোগ নিয়ে আসেন। দেহের যেখানে সমস্যা সেখানে ওই জল ও তেল পোড়া লাগিয়ে ভালো হয়ে যাচ্ছে। অথচ ডাক্তারও সে রোগ সারাতে পারেননি আগে৷ তাই দিনে দিনে মানুষের ভিড়ও বাড়ছে৷’’ আর যারা এসব কুসংস্কার মানুষের মধ্যে গেঁথে দিচ্ছেন তাঁদের দাবি, সবই ইষ্ট দেবতার কৃপা৷
হুগলি জেলার সিএমওএইচ শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এটা পুরোপুরি অন্ধবিশ্বাস। আমি বিষয়টি খবর নিয়ে দেখছি। যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে তাহলে বিএমওএইচ-কে বলে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার কথা বলা হচ্ছে। তবে প্রতি শনিবার এই সব অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কার চলে এই এলাকায়। ভ্রূক্ষেপ নেই প্রশাসনের।’’
আরও পড়ুন: আকাশী আর সাদায় গোটা বাড়িটাই রাঙিয়ে ফেলেছেন আর্জেন্টিনার এই ভক্ত
বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে চন্দন দেবনাথ বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা সরকারি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঘটছে৷ সেটাই অবাক ব্যাপার। এই ধরনের কুসংস্কার কোনও ভাবেই মানা যায় না। আমরা বিঘাটিতে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। মানুষ কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্ধ বিশ্বাসী হয়ে যান। তা থেকে আমরা সেখানে ক্যাম্প করে মানুষকে বোঝাবো।’’ ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে চন্দননগর কমিশনারেট৷